• প্রাণ খুলে শিশুর মত হাসুন। হাসি সব অসুখ সারিয়ে দেয়। খুব কষ্টের মধ্যেও যদি হাসা যায় মন ভালো হবেই।
• গলা ছেড়ে গান করুন। সুরেলা বেসুরো বেতালা কিচ্ছু নজর দেওয়ার দরকার নেই।
• বিশেষজ্ঞরা বলেন নাচের মত মন ভালো রাখার ওষুধ আর কিছু হয়না। মাঝে মাঝে একটু আধটু নেচে নেবেন। একার মনে কিছুক্ষণ পাগলামো করা ভালো। মন উৎফুল্ল থাকে।
• নিজের শখ- ভালোলাগা - পছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিজেকে ভালোবাসতে হবে।
• প্রত্যয়ী হন। আপনিও সব করতে পারেন। দরকার শুধু একটু অধ্যবসায় ও সৎ চেষ্টার।নিজের ওপর ভরসা ও বিশ্বাস দুই-ই রাখুন।
• স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। শরীর ভালো তো মন ভালো।
• কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার ক্ষমতা ও মানসিকতা রাখতে হবে। খুব ছোট্ট উপকারের জন্যও কৃতজ্ঞতা জানান।
• অন্যের জন্য খুব সামান্য হলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। কিন্তু নিজের স্বার্থহানী না ঘটিয়ে। অন্যের ভালো করলে মনে এক ধরনের প্রশান্তি আসে।
• অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা মনেও আনবেন না।কথায় আছে অন্যের জন্য খুঁড়ে রাখা কুয়োতে নিজেকেই পড়তে হয়।
• সব কিছু নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করবেন না। সব কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রনাধীন হয়না, সম্ভব না। কিছু জিনিস ছেড়ে দিতে হয়। সব কিছু নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী করার চেষ্টা করলে নিজেদের মানসিক অশান্তিই শুধু বৃদ্ধি পায়। যেটুকু নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব সেইটুকুতেই মনঃসংযোগ করা ভালো।
• নিজের দোষ গুন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা উচিত। যে কোনও ঘটনায় আগে নিজেকে বিশ্লেষণ করলে ভালো। যেকোনও বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে পুরো বিষয়টিকে ভালো করে ভেবে দেখুন। হয়তো ঘটনার তীব্রতা বেশি নয়। অকারনে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিলে শেষে মনঃকষ্টে আপনাকেই ভুগতে হবে।
• মাঝেমধ্যে দৈনন্দিন নিয়ম থেক ছুটি নিন। একঘেয়ে জীবন মনঃকষ্টের অন্যতম কারন। কিছু সময় নিয়ম ভাঙ্গার মজাই আলাদা হয়।
• কখনও কখনও ছোটখাটো কেনা কাটা করুন। কেনার কিছু না থাকলে window shopping করুন। তাতেও মন ভালো হয়ে যায়।
• সামাজিক মাধ্যম একটি মিথ্যার জগৎ। তাকে সত্যি ভেবে নিজের জীবনকে তার সাথে জড়িয়ে জটিল না করারই উচিত। সামাজিক মাধ্যম থেকে দুরে থাকুন। থাকলেও সহজ ভাবে নিন। অন্যের সাথে তুলনা করে মাথা খারাপ করবেন না।
• নিজের পছন্দের ভালোলাগার ভালোবাসার মানুষদের সঙ্গে সময় কাটান। যখনই একটু সময় পাবেন চেষ্টা করুন তাঁদের সঙ্গ দিতে বা সঙ্গে থাকতে।
• প্রত্যাখ্যান মানতে শিখুন। জীবনে হার-জিত থাকবেই। হেরে যাওয়াকে নিয়ে জীবন বলে ভেবে হা-হুতাশ করে সময় নষ্ট না করে আবার নতুন উদ্দ্যমে শুরু করুন। এগিয়ে যাওয়ার নাম জীবন। বাধা তো আসবেই।
• বর্তমানে প্রেম একটি অত্যন্ত আলোচনার বিষয় হয়ে গেছে।প্রেমে প্রত্যখ্যান যেন জীবনের বিশাল এক না পাওয়া ব্যাপার। প্রেম না আসা বা বিচ্ছেদ যেন বিশাল এক ক্ষতি। দয়া করে প্রেমকে এত গুরুত্ব না দিলেও হবে। যদি ভালোবাসার মানুষের আসার হয় আসবে, থাকার হয় তো সারা জীবন থাকবে, নাহলে চলে যেতে দিন, তপস্যা করে আনার চেষ্টাও করার দরকার নেই। না হলে ভেঙ্গে পড়ারও দরকার নেই। যদি প্রেমে পড়েন তাহলে সৎ থাকুন, সম্পর্ককে দাম দিন, সময় দিন, গুরুত্ব দিন। ভালো থাকবেন।
• সবশেষে বলব - মন থাকা মানেই মনঃকষ্ট হওয়া। বলা হয় দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা ব্যথা বোধ একমাত্র মৃতদের থাকে না। অর্থাৎ জীবনের আর এক নাম যন্ত্রণা। তাই মনবেদনাকে সহজ ভাবে নিন। তীব্রতা বেশি হোক কম হোক, কষ্টকে কিকরে আনন্দে পরিবর্তন করা যায় তা খুঁজে বার করুন। আপনার আনন্দ আপনিই খুঁজে পেতে পারেন। বন্ধু বা বিশ্বস্ত মানুষকে কষ্টের কথা বিনা দ্বিধায় বলুন। প্রাণ খুলে কাঁদুন। কোনো প্রকারের ভয়কে পাত্তা দেবেন না। সব সমস্যারই সমাধান থাকে। শুধু একটু ধৈর্য ধরে তা খুঁজে নিতে হয়। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন। মানসিক অসুস্থতাও এক ধরনের অসুখ। লজ্জার কোনো কারণ নেই।সবার হতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসা দরকার। শুধু নিজের মনে গুমরে কষ্ট বাড়িয়ে জীবন শেষ করার কথা একেবারেই মনে আনবেন না। দুটো কথা সব সময় মনে রাখবেন - এক আপনার একটা ভুল পদক্ষেপ আপনার প্রিয়জনদের জীবন নষ্ট করে দেবে। তাঁদের জীবনও শেষ হয়ে যাবে। দুই- আপনার থেকেও অনেক বড় সমস্যা নিয়ে বহু মানুষ প্রতিদিন জীবন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তাই আত্মহত্যা করা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। নিজের মনকে ভালো রাখার চাবিকাঠি আপনার হাতেই আছে। শুধু একটু নজর মেলে দেখার অবকাশ টুকুই চাই। 

 মনে রাখার মত কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ 

• সুন্দর জীবনের মূল কথা হল সুন্দর স্বাস্থ্য । সর্বাগ্রে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।
• মিথ্যা কথা বলা পরিত্যাগ করতে হবে। কারও পক্ষেই সম্পূর্ণ সত্যবাদী হওয়া সম্ভব নয় ঠিক, কিন্তু অকারণে অযথা মিথ্যার আশ্রয় না নেওয়াই উচিত। জীবনের অর্ধেক জটিলতা কমে যায়।
• নির্মল জীবনের জন্য মানসিক শান্তির প্রয়োজন।মানসিক শান্তি নষ্ট হয় এমন কাজ না করাই উচিত। নিজেও ভালো থাকুন অন্যকেও ভালো থাকতে দিন।
• পরিবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। সারাদিনে কিছু সময় অবশ্যই পরিবারকে দিন।
• জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি সৎ ও বিশ্বস্ত থাকুন। যে মানুষটি আপনার সুখে দুঃখে আপনার পাশে থাকেন তাঁকে তাঁর ন্যায্য মর্যাদা দেওয়া উচিত।
• অর্থ জীবনের সবকিছু নয় ঠিক। কিছু অর্থ অবহেলা করার বস্তুও নয়। আয় - ও ব্যয়ের সমতা রাখা উচিত।
• কষ্ট, দুঃখভোগ করাই জীবন। তাই সুখের সময় নিজেকে তৈরি রাখা উচিত কষ্ট পাওয়ার জন্য।এতে জীবন সরল হয়।
• যে সম্পর্ক থেকে ভালোবাসা, সন্মান, মর্যাদা নষ্ট হয়ে গিয়ে শুধু তিক্ততা, অসম্মান, অমর্যাদা অবশিষ্ট থেকে গেছে — যে সম্পর্ক বিষাক্ত হয়ে গেছে তা যথা শীঘ্র সম্ভব ত্যাগ করা উচিত।
• যে কোনো বিষয়ে সব সময় খুঁত বার করে অভিযোগ করার অভ্যাস ত্যাগ করাই ভাল। কোনো ব্যক্তি বা বস্তুই সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে পারেনা। আমরা প্রত্যকেই ভালো মন্দের সংমিশ্রণে তৈরি। মন্দ না খুঁজে ভালোকে দেখতে শিখুন।
• অন্যের ক্ষতির চেষ্টা কখনো না করাই উচিত। তাতে নিজের ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কর্মফলে বিশ্বাসী হতে হবে।
• সবশেষে বলব নিজেকে দাম দিতে হবে। কাউকে এত বেশি মূল্যবান করে না তোলাই উচিত যে নিজে মূল্যহীন হয়ে পড়েন। স্বার্থপর হওয়া দোষের না।বর্তমানে আগে নিজেকে বাঁচাতে জানতে হবে।

জীবনকে সুন্দর করে তোলার কিছু উপায় 

সুন্দর জীবন আমাদের সবার কাম্য। কিন্তু জীবনকে সুন্দর করে তুলতে আমাদের ঠিক কি করা উচিত সে বিষয়ে আমরা অনেকেই মনস্থির করে উঠতে পারিনা। আজ সুন্দর জীবন পাওয়ার জন্য  যে ছোট ছোট যে কাজগুলো করা উচিত সেই বিষয়ে বলি। 

• রোজ ভোরে বাড়ির সবার ঘুম ভাঙার খানিকটা আগে নিজে উঠে পড়ুন। এই সময়টা সম্পূর্ণ ভাবে নিজে দিন। শুধু নিজেকে নিয়ে থাকুন — "আমার সাথে আমি" । এই বিষয়ে স্বামীজির একটি বাণী আমি খুব মানি।

• নিজের জন্য এক কাপ চা বা কফি করে নিন এই সময়। সারাদিন কি কি কাজ করবেন তার একটা মোটামুটি খসড়া করে নিন মনে মনে । এতে সারাদিনের কাজ সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করতে অসুবিধা হবে না। নিজের পছন্দের কাজগুলোর জন্যও সময় বেরিয়ে আসবে।

• সারাদিনের মধ্যে খুব সামান্য একটু সময় অন্তত ১৫ মিনিট প্রকৃতির সাথে কাটান।২০১০ সালে Journal of Environmental Psychology তে প্রকাশিত এক গবেষনায় দেখা দেখা প্রতিদিন যাঁরা অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট প্রকৃতির সাথে কাটান তাঁরা প্রাণশক্তিতে ভরপুর হন।এমন কি কাজের ফাঁকে কয়েক মুহুর্তের এক টুকরো প্রকৃতির ছোঁয়া — যেমন ঘাসে পা ফেলে হাঁটা বা খোলা আকাশের দিকে কয়েক মুহুর্ত তাকিয়ে থাকা বা জানলা খুলে বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়া ও মনের বিকাশ ঘটায়। মন ও শরীরকে তাজা রাখে। এই সময় ফোনবিচ্ছিন্ন থাকবেন।

• সারা সপ্তাহে একদিন অন্তত সামাজিক মেলামেশা করুন। পার্টি বা হৈ চৈ করার দরকার নেই। একজন কাছের বন্ধুর সাথেই না হয় দেখা করলেন। একটু গল্প আড্ডা প্রাণ খুলে হাসা। অসামাজিকতা ধীরে ধীরে মানসিক জড়তার জন্ম দেয়।

• যাদের সাথে বহুদিন যোগাযোগ নেই তাদের সাথে একবার কথা বলুন। এক দুজন নতুন বন্ধু বানান। কে বলতে পারে আপনার সামনে হয়ত জীবনের কোনো আলোকিত পথ খুলে যেতে পারে।

• সপ্তাহের ৬ দিন রুজি রোজগারের চেষ্টায় ব্যস্ততায় কেটে যায়। কিন্তু চেষ্টা করুন সপ্তম দিনটি শুধু পরিবারকে দিতে। প্রয়োজনে এই দিনটির জন্য আগে থেকে সময় ও কিভাবে কাটাবেন তার পরিকল্পনা করে রাখুন। পরিবারের মানসিক স্বাস্থ্য সুন্দর হলে আপনার জীবনও সুন্দর হতে বাধ্য।

• সৃষ্টিশীল মানুষরা চেষ্টা করুন সকালের দিকে নিজেদের সৃষ্টিকারী কাজগুলো করার। গবেষণায় দেখা গেছে ঘুম ভাঙ্গার পর কর্টিসোল হরমোন শক্তির জোগান দিতে সাহায্য করে, ফলে মনসংযোগ বাড়ে। ফলে যে কোনো সৃষ্টি সুষ্ঠ ও সুন্দর হয়।

• ধীরলয়ে ও নিম্ন স্বরে কথা বলার অভ্যাস করুন। এতে আপনার চারিত্রিক দৃঢ়তা প্রকাশ পায়। গাম্ভীর্য ও ব্যক্তিত্ব আপনার মত প্রকাশের গ্রহণযোগ্যতাকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়। এতে আপনার মানসিক প্রশান্তি আসে।
• ছুটির দিনগুলো যাতে আনন্দমুখর হয় তার চেষ্টা করুন। ছোট ছোট পাওয়া খুশিগুলো জীবনের কঠিন সময়কে সহজে পার করে দেবার শক্তি দেয়।

• মাঝে মাঝে কাজের স্থানের রদবদল করুন। সম্ভব হলে স্থান পরিবর্তন করুন। সম্ভব না হলে বসার স্থানের কিছু জিনিস পত্রের পরিবর্তন করে নতুনত্ব আনুন।
• দিনের শেষে গিয়ে যদি এরকম বোধ হয় যে আজ সারাদিন কিছুই কাজের কাজ করিনি তারমানে আপনি সারাদিন বিভ্রান্তিমুলক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। নিজেকে সামলে নিন। ফোন, বন্ধুর আড্ডা, বিনোদন ইত্যাদি থেকে নিজেকে কিছু সময় দূরে রাখুন। নিজেকে শান্ত করুন, গভীর নিশ্বাস নিন, মনসংযোগ করুন। ভেবে ঠিক করুন অতি প্রযোজনীয় কাজ কোনটি। ক্রম তৈরি করুন। এক এক করে করতে শুরু করুন। সব যে শেষ হয়েই যাবে তা নয়। কিন্তু শুরু করে দিন — করতে থাকুন — ঠিক শেষ হবে।
• সুষম ও পরিমিত আহার গ্রহণ করুন। খাদ্য তালিকায় তাজা সব্জি, ফলের পরিমান বেশী রাখুন। সারাদিনে পর্যাপ্ত পরিমান জল খান। শরীরকে গ্লানিমুক্ত রাখতে জলে ভুমিকা অসাধারন। নেশাজাত দ্রব্য পরিত্যাগ করাই ভাল।

• জীবনের প্রতি দায়িত্বশীল ও আশাবাদী হন। যে কোনো বিষয়ের মধ্যে ভাল খোঁজার চেষ্টা করুন ।খারাপ গুলো লক্ষ্য করুন যাতে সাবধান হতে পারেন, কিন্তু সেগুলোকে নাদেখা করে উপেক্ষা করাই মঙ্গল।
• প্রাণ খুলে শিশুর মত হাসুন। কারনের অপেক্ষায় থাকবেন না। আসে পাশের যে কোনো ছোট বড় ঘটনায় হাসি খুঁজে নিন। হাসিখুশি থাকা জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোর উন্মোচন ঘটায়।

• মাঝে মাঝে ব্যস্তময় কর্মজীবন থেকে একটু লম্বা বিরতি নিন। এই সময় নিজের পছন্দের সেই কাজগুলো করুন যেগুলো ব্যস্ততা আপনাকে এতোদিন করতে বাধা দিয়েছে।
• মাঝে মাঝে কিছু সামাজিক কাজে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করুন। মনে শান্তি পাবেন।

• অন্যের কাজের প্রশংসা করতে শিখুন। নিন্দা করার মধ্যে কোনো বাহাদুরি নেই জানবেন। আপনার ছোট্ট একটু প্রশংসা অন্যকে অনেকখানি ভাল কাজ করতে অনুপ্রেরনা দেয়। অপরকে খুশি করার মত আনন্দের কাজ কমই আছে। অন্যের মুখে হাসি ফুটলে আপনিও হাসবেন।

• কথা বলার থেকে কথা শোনায় বেশি মন দিন। একটি অর্থবহ ও পরিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে গেলে আগে একজন ভাল শ্রোতা হওয়া দরকার। যদি অন্যের আস্থা অর্জন করতে চান তাহলে বিনা বাধায় অপর পক্ষের কথা মন দিয়ে শুনুন। তবেই তাঁর পরিস্থিতির সাথে একাত্ম হতে পারবেন। এতে সম্পর্ক দৃঢ় হবে।

• নতুন প্রযুক্তির খোঁজ রাখুন। নিজেকে তার উপযুক্ত করে তুলুন। জীবনের অনেক সমস্যার সহজ সমাধানের চাবিকাঠি পেয়ে যাবেন।

• গান শুনুন, বই পড়ুন। নিজের দৈনন্দিন জীবনের রোজনামচা লিখুন। ভারাক্রান্ত মন হাল্কা হয়ে যায়।

• আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখুন। আয়ের তুলনায় ব্যয় যেন অবশ্যই কম হয়। সঞ্চয়ের দিকে মনযোগী হওয়া একান্তই দরকার।

• কোনোকিছুর জন্য নিজের মতাদর্শের জলাঞ্জলী দেবেন না। "না" বলতে শিখুন। নিজের মতের বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করবেন না। তাতে আখেরে আপনার মানসিক শান্তি নষ্ট হবে। নিজের সীমার বাইরে গিয়েও কিছু করবেন না। আপনি যা আপনি তাই থাকুন।

• যোগা - প্রানায়ামের অভ্যাস করুন। এতে সুস্থ ও সুন্দর শরীর ও মনের অধিকারি হওয়া যায়। সুস্থ- সুন্দর শরীর ও মন সুন্দর জীবনের প্রতিফলন ঘটায়।

                                                      ছবি সৌজন্যঃ www.heart.org

 জীবনকে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর করার জন্য প্রথমেই যা মনে রাখতে হবে তা হল একটি নিয়ন্ত্রিত, নিয়মনিষ্ঠ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাত্রা। দৈনন্দিন জীবনে অবশ্যই কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত এবং এই নিয়মগুলি সব ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করতে হবে। নিজের জীবনের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখা দরকার। তা সে নিজের ব্যবহারই হোক, ব্যক্তিগত মতামতই হোক কিংবা খাদ্যাভ্যাসই হোক না কেন। খুব ছোট ক্ষেত্রেও আদর্শ মেনে চলা উচিত। কোনও প্রলোভন বা পরিস্থিতিতেই সেই স্থান থেকে বিচ্যুত হবো না এই মানসিক দৃঢ়তা থাকলে তবেই আমরা একটি সুন্দর, সুস্থ্য ও আলোকিত জীবন পেতে পারি।

স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস অনেকাংশেই দায়ী। কথায় আছে - " সুন্দর স্বাস্থ্য সুন্দর মনের বিকাশ ঘটায়।"  দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত তা বলার আগে একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। অনেকে ভাবেন নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মানে নিজের পছন্দের খাবার থেকে বঞ্চিত থাকা, না খেয়ে থাকা বা কঠিন কিছু অভ্যাস পালন করা। এই ধারনাটি একেবারেই ভুল ।

নীচে দেওয়া খাদ্য পিরামিডটা লক্ষ্য করলে আমাদের কি ধরনের খাবার কত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত তার একটা আন্দাজ পাওয়া যায়। এটি বর্তমান সময়ে সাথে সামঞ্জস্য রেখে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা নির্মিত। পিরামিডের বিস্তৃত অঞ্চলের বস্তু সমূহের গ্রহণ বাঞ্ছনীয় এবং বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। সঙ্কীর্ণ অঞ্চলের বস্তুগুলি কম পরিমাণে গ্রহণীয়।

খাদ্য পিরামিড

দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যাভ্যাস কি ধরনের হওয়া উচিত তা বলতে গেলে বহুল প্রচলিত একটি বাক্য দিয়ে এক কথায় বোঝান যায়। বিখ্যাত পুষ্টিবিদ ডেইসি এ্যাডেল ডেভিস বলেছিলেন - " প্রাতঃরাশ হবে রাজার মত, মধ্যাহ্নভোজ রানীর মত, নৈশভোজ পাখীর মত।" অর্থ অত্যন্ত সহজ।এইটিই খাদ্যাভ্যাসের মূলমন্ত্র করতে হবে আগে।

এবার যে খাদ্যাভ্যাসগুলি রোজকার জীবনে সহজেই মেনে চলা যায় সেগুলি হলঃ —

• ঘুম থেকে উঠে কমপক্ষে ৫০০ মিলি জল খেতে হবে।হাল্কা উষ্ণ জল খেলে বেশি ভাল। সারাদিনে ২/৩ লিটার জল খাওয়া বাঞ্ছনীয়।
• প্রায় প্রতিদিনের বিভিন্ন সময়ের খাবার গ্রহণের সময় এক রাখার চেষ্টা করা উচিত।সারাদিনের খাবারকে ৪-৬ টি ছোট ভাগে ভাগ করে নিয়ে গ্রহণ করতে পারলে ভালো। একসাথে অনেকটা খেয়ে নিলাম, তারপর অনেকক্ষণ কিছুই খেলাম না - এই অভ্যাস ক্ষতিকর। খাবার খান মাত্রা রেখে।
• খাবারের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট সব প্রকারের উপাদানই যেন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনও একটি উপাদান সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া উচিত না। চর্বিযুক্ত খাবার, মিষ্টি জাতীয় খাবার ও লবণ যথা সম্ভব কম গ্রহণ করা উচিত।

• বলা হয় সারাদিনে ৫ প্রকার ফল ও ৫ প্রকার সব্জী খাবারের তালিকাভুক্ত করতে পারলে তা উপকারী। এর মানে এই নয় যে ৫ টি গোটা ফল রোজ খেতে হবে। ৫ প্রকারের অন্তর্ভুক্তি করা ভালো। খাদ্য উপাদানে সব্জী, ফল, ডাল, ডিম, ফাইবার জাতীয় খাদ্য থাকা উচিত।
• কার্বোহাইড্রেট থেকে শরীরে শক্তির জোগান হয়। সরল কার্বোহাইড্রেট যেমন চাল, ময়দা, আলু জাতীয় খাবারের পরিবর্তে জটিল কার্বোহাইড্রেট (Complex Carbohydrate) গ্রহণ করতে পারলে ভালো হয়। যেমন আটা, ব্রাউন রাইস, ওটস, ডালিয়া প্রভৃতি।
• খাবারের উপাদানে প্রোটিন জাতীয় খাবার যথা মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, দই, ছানা, প্রভৃতি পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। বেশি পরিমাণে উদ্ভিজ প্রোটিন খাওয়া ভাল। যথা - ডাল, চিনা বাদাম, মটর, সয়াবিন, কুইনোয়া, স্পিরুলিনা, তফু, চিয়া সিড, ব্রক্কলি, মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের শাক প্রভৃতি।                                             

• স্বল্পপাক খাবার গ্রহণ করা সবথেকে বেশি স্বাস্থ্যকর। মশলাদার ও ভাজা খাবারের বদলে পোরা বা সেঁকা ( baked & grilled ) খাবার স্বাদু ও স্বাস্থ্যকর বেশি হয়।
• স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের একটি কারণ যদিও ওজন নিয়ন্ত্রণ কিন্তু সেটি একমাত্র কারণ নয়। সু-খাদ্যাভ্যাস শারীরিক সুস্থতা দেওয়ার সাথে সাথে মানসিক বিকাশেও সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্য থালি

• মনের ইচ্ছা মত খাবার অবশ্যই খাওয়া যাবে। সাথে ব্যায়াম ও শরীরচর্চা ভুলে গেলে চলবে না।নিয়মিত শরীরচর্চা করা দরকার। কিছু না হোক ১৫ মিনিট হাঁটলেও চলবে।
• পরিশেষে বলব নৈশভোজ যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা উচিত। নৈশভোজের অন্তত ২ ঘণ্টা পর ঘুমাতে যাওয়া উচিত। এতে রাতের খাবার পরিপাকের সময় পাবে। যেকোনো সময় খাবারের পরিমাণ নির্দিষ্ট ও পরিমিত রাখতে হবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে সপ্তাহে বা দু'সপ্তাহে একদিন উপবাস করা উচিত।উপবাস শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।

দৈনন্দিন উপবাস

একটা বহুল শোনা কথা বলি  "জ্ঞান দেওয়া খুব সহজ পালন করা খুব কঠিন" । আমার পরবর্তী লেখা পড়ে এই কথাটাই হয়ত সবার মনে আসবে। কারণ আমার দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস উপরে বলা অনেক কিছুই মেনে চলে না । আমার উচ্চতা অনুযায়ী আমার ওজন ৫০ কিলো থেকে ৫২ কিলোর মধ্যে থাকা উচিত। কিন্তু তা একসময় বৃদ্ধি পেয়ে  ৭৭ কিলোতে পৌঁছেছিল। পরে কমলেও ৬৫ কিলোর নীচে নামানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ওজন বৃদ্ধি পাওয়ায় আনুষঙ্গিক বেশ কিছু অসুস্থতাও সঙ্গী হয়। অগত্যা চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলি যা এখনও পালন করছি। প্রথমত আমি প্রতিদিন একটি ১৪-১৫ ঘণ্টার উপবাস (intermittent fasting) করি।সকালে একগ্লাস হাল্কা উষ্ণ জলে একটা লেবুর রস দিয়ে দিন শুরু হয়। এরপর চিনি দুধ বর্জিত লাল চা। প্রাতঃরাশে ডিম, দই, কিছু ফল বা ওটস, সুজি, ডালিয়া প্রভৃতি ।মাঝে মধ্যে লুচি পরোটা যে খাইনা তা নয় কিন্তু। খাই তবে রোজ না। দুপুরের খাবারটি খেতে খেতে আমাদের একটু বেশি দেরী হয় কারণ স্কুল ও অফিস থাকে। প্রায় দুপুর গড়িয়ে বিকালে করা মধ্যাহ্নভোজন বেশিরভাগ সময় হাল্কাই হয় যেমন- শাক, তেতো, ডাল, ভাজা, মাছ/মাংস প্রভৃতি। সপ্তাহে একদিন নিরামিষ। কোনও কোনওদিন অবশ্যই মশলাদার খাবার খাই, কিন্তু পরিমিত। এরপর সন্ধ্যাবেলা শুধু এক কাপ লাল চা এক চামচ মধু দিয়ে।প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট দিনে উপবাস। এই আমার দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস। এর ফলে বর্তমানে আমি অনেক সুস্থ ও ভালো আছি।এটি কিন্তু সবার জন্য প্রযোজ্য নয়।

যে কোনও খাদ্যাভ্যাস করার আগে একবার নিজের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত তা জানতে হবে। ওজন অনুযায়ী কত ক্যালোরি খাবার রোজ গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকবে তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মানা উচিত। সবার সব খাবার গ্রহণ করা সম্ভব ও না উচিত ও না। প্রত্যেকের স্বাস্থ্য অনুযায়ী খাবারে তালিকা প্রস্তুত করা উচিত। সুন্দর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলে জীবনকে আরও সুন্দর ও সুস্থ করে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।🍀 

নেতিবাচক মনোভাব পরিবর্তন করার উপায়ঃ

                                                    ছবি সৌজন্যঃ  yourdost.com

মন এমন একটা অনুভুতি যাকে আমরা সব সময় নিজেদের আয়ত্বে আনার চেষ্টা করলেও আয়ত্বে আনতে পারিনা। কখন কি চিন্তা ভাবনা আমাদের মনকে আছন্ন করে ফেলে তা আমরা অনেক সময়ই বুঝে উঠতে পারিনা। নেতিবাচক চিন্তাও অনেকসময়ই এই ভাবেই আমাদের মন ও মস্তিস্ককে আছন্ন করে ফেলে। নেতিবাচক চিন্তা থেকেই ধীরে ধীরে নেতিবাচক মনোভাবের জন্ম হয়, যা মানবজীবনে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি সৃষ্টি করে।দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস আমরা খারাপ চিন্তার জটিল গোলকধাঁধায় আবর্তিত হতে থাকি। এর ফলে এক সময় হতাশা, অবসাদ ও বিভিন্ন ধরনের কঠিন মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। জীবনের চলার পথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমাদের সকলকেই যেতে হয়। সেই সমস্ত কষ্টকর স্মৃতি আমাদের পিছু তাড়া করতে থাকে। এর থেকেই নেতিবাচক চিন্তার জন্ম হয়। দীর্ঘদিন এই ধরনের মনোভাব নিজের ভেতর লুকিয়ে না রেখে বা অনবরত সেই স্মৃতিকে মনে না করে যত শীঘ্র সম্ভব তা দূর করাই বাঞ্ছনীয়। 

 নেতিবাচক মনোভাব থেকে নিজেদের মুক্ত করার কিছু উপায় হলঃ --

Ø     Øযখনই অনুভব করবেন যে নিজের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে তখনই নিজের মনকে শক্ত করতে হবে ও বোঝাতে হবে যে সব কিছু খারাপ হতে পারেনা। জীবন ভালো ও খারাপের সমিশ্রনে তৈরি। খারাপ থাকলে ভালো অবশ্যই আছে। 

Ø    Øনেতিবাচক চিন্তাকে মন থেকে দূর করার সহজ উপায় হল যেই মুহূর্তে নেতিবাচক চিন্তার উদয় হবে তখনই কোনও প্রিয়জন বা বন্ধুকে সরাসরি বা ফোন করে সেই চিন্তা জানিয়ে দিন।গবেষণায় দেখা গেছে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা বলে ফেললে অনেক সহজে সেই চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কাউকে জানাতে না পারলে লিখে ফেলুন। তাতেও উপকার হবে। 

Ø     Øহাস্যরসাত্মক বই পড়া, হাসির চলচ্চিত্র দেখা বা এমন কিছু করা যা হাসতে বাধ্য করে তা মনকে নেতিবাচক মনোভাব থেকে মুক্তি দেয়। 

Ø    Ø নেতিবাচক ভাবনাকে ইতিবাচকে পরিণত করা। এটি একটি বিশেষ পদ্ধতি যা দিয়ে আমরা নেতিবাচক চিন্তাকে বর্জন করতে পারি।এই পদ্ধতিতে যখন মনে হবে – “ আমার দ্বারা এই কাজটা করা কখনই সম্ভব নয়” , সেই মুহূর্তেই মনের জোরে নিজের চিন্তার গতিপথ পরিবর্তন করে ভাবতে হবে “ আমি এই কাজটা সব থেকে সুন্দর ও সফলভাবে করবই”। তাহলেই নেতিবাচক চিন্তা আর মনে স্থান পাবেনা।

 Ø  যখন নেতিবাচক চিন্তা মনকে আচ্ছন্ন করবে তখন একটু নিজেকে সময় দিতে হবে। স্থির হয়ে একটু বসে গভীর নিঃশ্বাস নিতে হবে। গভীর শ্বাস – প্রশ্বাসের ব্যায়াম এই ধরনের চিন্তা থেকে মুক্ত করে মনকে শান্ত করে।

Ø  যে কাজ করলে মন ভালো থাকে তাই করতে হবে। নিজের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিতে হবে। যে কোনও কাজ যেমন – গান শোনা – গাওয়া, নাচ করা – দেখা, হস্তশিল্পের কাজ করা, বই পড়া ইত্যাদি।

Ø  মনকে নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে রাখার জন্য নিয়মিত যোগ ব্যায়াম এবং প্রকৃতির সাথে সময় কাটান খুব দরকার। সবুজ প্রকৃতির ছোঁয়া মনকে উজ্জীবিত করে। ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে সাহায্য করে।

Ø  ভালো সাহচর্য তৈরি করুণ। আশেপাশের সুস্থ ও সুন্দর মানসিকতার মানুষদের সাথে সময় কাটানো দরকার। ইতিবাচক বন্ধুত্ব করুন। নেতিবাচক বন্ধু বর্জন করুন ।

Ø  মনকে চাঙ্গা করতে কেনাকাটি করার বিকল্প নেই। যেকোনো বড় দোকানে বা বাজারে চলে যান। না যেতে পারলে অনলাইন শপিং এর সাহায্য নিন। কিছু কেনার দরকার নেই। শুধু সুন্দর সুন্দর অফুরন্ত  জিনিস দেখুন।চিন্তার গতিপথ পরিবর্তন হলেই নেতিবাচক মনোভাবও দূর হয়ে যাবে।

Ø   জীবনে ভুল ত্রুটি হবেই। কেউ সম্পূর্ণ নির্ভুল হতে পারেন না। তাই যে কোনো ক্ষয় – ক্ষতির জন্য নিজেকে দায়ী করা  বা ভাবা এরকম না করলেই ভালো হত কিংবা আমার এটা আশা করাই অন্যায় হয়েছে – এই ধরনের চিন্তাকে মনে স্থান দেওয়ার দরকার নেই।ঘটে যাওয়া কোনও কিছুই ফিরিয়ে আনা যায়না এবং প্রতি সমস্যার সমাধান থাকে। ইতিবাচক এই ভাবনাগুলোকে হাতিয়ার করে জীবনে এগিয়ে যেতে হবে।

Ø  সব শেষে একটা ছোট্ট গল্প বলব। কয়েকদিন আগে একটা বই পড়ছিলাম। রবিন শর্মার লেখা “ The Monk Who Sold His Ferrari”। এই বইয়ে আছে হিমালয়ের সাধুদের মনে যখন কোনও নেতিবাচক চিন্তা উদয় হয় তখনই  তাঁরা নিজেদের কান মূলে দেন।হাঁটতে হাঁটতে হিমালয়ের বরফগলা জলের খরস্রোতা ঝর্নায় স্নান করতে শুরু করেন।ততক্ষন অবধি স্নান করেন যতক্ষন না তাঁদের শরীরের পেশী সমূহ অবশ হয়ে আসে। এই ভাবে তাঁরা নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিজেদের মুক্ত করেন। একে “ বিরোধী ভাবনা” বা “ Opposition Thinking” বলে।

এই উদাহরণটির অর্থ হল যখনই কোনও কু-চিন্তা বা নেতিবাচক চিন্তা মনে উদয় হবে তাকে তৎক্ষণাৎ দূর করা দরকার। মনকে এমন কোনও কাজে নিয়োজিত করা দরকার যাতে চিন্তার গতিপথ পরিবর্তিত হয়। নাহলে অঙ্কুরিত চিন্তাটি ধীরে ধীরে বৃক্ষের আকার ধারন করে জীবনের চলার পথকে কঠিন ও বন্ধুর করে তুলবে। সুতরাং যথাশীঘ্র সম্ভব নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত করাই উচিত।