শিশুর আহারে ফলের রস

 

শিশুর আহারে ফলের রস



শিশুর ছয় মাস বয়েস অবধি স্তনদুগ্ধ ব্যতীত অন্য কোনো খাবার খাওয়ানো উচিত নয়। ছয় মাসের পর থেকে শিশুর শারীরিক অবস্থা বুঝে অল্প অল্প করে অন্যান্য খাবার খাওয়ানো উচিত। অন্যান্য খাবারের মধ্যে প্রথমেই ফলের রসের কথা মনে আসে। ছয় মাস বয়েসের পর থেকে শিশুকে কি কি ফলের রস খাওয়ানো উচিত আর কিভাবে খাওয়ানো উচিত সেই বিষয়ে আজ বলব।

স্তনদুগ্ধের পাশাপাশি শিশুর পুষ্টি পুরণের জন্য শক্ত খাবারের সাথে প্রতিদিন ফলের রস দেওয়া উচিত। ফলের রস শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও অ্যান্টিবডির যোগান দেয়।

শিশুদের ফলের রস দেওয়ার ক্ষেত্রে মনে রাখার বিষয়গুলিঃ

  • ফলের রস দেওয়ার জন্য বোতলের বদলে একটি কাপ ও একটি চামচ ব্যবহার করা ভালো, অল্প পরিমাণ দিয়ে শুরু করতে হবে। প্রথমে দিনে দুই টেবিল চামচ এবং পরে পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে ।
  • ফল মিক্সিতে বা হাতে করে ভালোভাবে পিষে নিয়ে পাতলা কাপড় বা মিহি ছাঁকনিতে ছেঁকে নিতে হবে। রসের মধ্যে যেন কোনো রকম শক্ত অংশ না থাকে। নাহলে শিশুর গলায় আটকে যেতে পারে। যা ক্ষতিকর।
  • বোতল বা জল খাওয়ার টাম্বলারে ফলের রস ভরে শিশুকে পরিবেশন করলে খেতে সুবিধা হয়।
  • যাতে সহজে হজম করতে পারে তাই প্রাথমিকভাবে তাকে পাতলা রস দিতে হবে।এতে জল ও ফলের রসের পরিমাণ ৫০:৫০ রাখাই উচিত।কিছুদিন খাওয়ার পর তা শিশু শরীরে সহ্য হয়ে গেলে জলের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। এক বছরের পর শুধু ফলের রস দেওয়া উচিত হবে।
  • একটি একক ফল বা সবজি দিয়ে শুরু করতে হবে, যাতে শিশুর সহজে হজম করতে সক্ষম হয়।
  • রসের কারণে সৃষ্ট যে কোনও অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার জন্য শিশুকে সঠিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এবং যদি এই জাতীয় কোনও অ্যালার্জি লক্ষ্য করা যায় তবে অবিলম্বে সেই ফলটি খাওয়ানো বন্ধ রাখাই বাঞ্ছনীয়।
  • ঋতুকালীন ফল দেওয়া অভ্যাস করা উচিত। যে ঋতুতে যে ফল পাওয়া যাবে তাই দেওয়াই ভালো।
  • বাজার জাত ফলের রস কোনও ভাবেই শিশুকে দেওয়া যাবে না।
  • জল বা শক্ত খাবারের পরিবর্তে শুধু রস খাওয়ানো উচিত না।
  • আট মাসের বাচ্চাদের মিশ্র রস অর্থাৎ দুটি বা তিনটি ফলের রস একসাথে খাওয়ানো যাবে।
  • মধ্যাহ্নের খাবারের মতো শক্ত খাবারের সাথে বা মধ্যাহ্নের এক ঘণ্টা আগে ফলের রস খাওয়ানো প্রতিদিনের নিয়ম করে ফেলা ভালো।

কোন কোন ফল দেওয়া যায়ঃ

যে কোনো ঋতুকালীন ফলের রস দেওয়া যায়। যেমন -

  • নারকেলের জল
  • আপেল
  • পাকা আঙুর
  • তরমুজের রস
  • কমলালেবুর রস
  • সবেদার রস
  • পাকা পেঁপের রস
  • কলার রস
  • লিচুর রস
  • আমের রস
  • মুসাম্বির রস

অনেক সময় ফলের রস একটু টকভাব থেকে যায়। সেক্ষেত্রে মধু মিশিয়ে দেওয়া উচিত। জল মেশানোর ক্ষেত্রে ঈষদুষ্ণ জল মেশানো স্বাস্থ্যকর।বাড়িতে তৈরি ফলের রস শিশুর ক্ষেত্রে সর্বাধিক উপযোগী হয়।প্রতিদিন একটি ফলের রস শিশুকে দেওয়া উচিত। যদি কোনো কারণে শিশুর শরীর খারাপ থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ফলের রস দেওয়া উচিত বা বন্ধ রাখা উচিত।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।  🍀

 

0 Comments

আপনার বক্তব্য