স্ট্যাটাস

লেখিকা - শ্বেতলীনা


 


 শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ঝগড়া-মারামারি,খিস্তি-খেউর এবং পরস্পরের পূর্বপুরুষ উদ্ধার করা কটূক্তি পরদিন রবিবার সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা অবধি পৌঁছালে দুই অবসন্ন নারী পুরুষ ক্লান্ত মনে ও অভুক্ত শরীরে আলাদা আলাদা ঘরে বিছানাকে আশ্রয় করল। আজ সারাদিন রান্নাঘরে আগুন অবধি জ্বলেনি।

বিছানায় শুয়ে নারীটি সামাজিক মাধ্যমের বন্ধুদের স্ট্যাটাসে জানালো –

“#আমি ও আমার ভালোবাসা "। আজকের বিশেষ রান্না – মাটন বিরিয়ানি, চিকেন রেজালা, নলেন গুড়ের পায়েস, জলপাইয়ের চাটনি আর কমলা ভোগ সাথে আমার ‘ভালোবাসা ’।

খুঁজে খুঁজে পুরনো অ্যালবাম ঘেঁটে বার করা খাবারে ছবির সাথে নিজের স্বামীকে জড়িয়ে ধরে তোলা একখানি ছবি।

পুরুষটিও একই ভাবে অভুক্ত পেটে ক্লান্ত বিষণ্ণ মনে অন্য এক সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের স্ট্যাটাসে জানালো –

“#এক নিখুঁত ছুটির দুপুর “। আজ দুপুরের ভুরিভোজ – ফুলকপি -কড়াইশুঁটি দিয়ে মুগডাল, বেগুনী, চিতল মাছের মুইঠ্যা, কচি পাঁঠার ঝোল, সত্যনারায়ণের মিষ্টি দই আর কালুর দোকানের বেনারসী পান সাথে প্রিয়তমার কোমল শরীরের ছোঁয়া।

এখানেও ইন্টারনেট থেকে খুঁজে খাবারের ছবি ও স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে তোলা একটি পুরনো ছবি।

সামাজিক মাধ্যম হিংসায় জ্বলে পুড়ে জানলো এক সুখী দম্পতির গল্প। অন্তর্যামী জানলেন দুই দুঃখী আত্মার যন্ত্রণা।আপনজনেরা বুঝলেন সামাজিক মাধ্যমের স্ট্যাটাস অনেক যন্ত্রণা কমিয়ে দেয়। পরিচিতরা মুখ বেঁকিয়ে মুচকি হেসে জানলো স্ট্যাটাস সর্বদা সত্য হয় না।


চিত্র সৌজন্যঃ গুগল 

0 Comments

আপনার বক্তব্য